কি! পড়তে বসলে ঘুমে ধরে?
যা পড়ো তা ভূলে যাও?
পড়তে ভালো লাগে না?
অথচ ঢাবিতে পড়ার স্বপ্ন দেখো!!!
তাহলে এ স্বপ্ন কি পূরন হবে?
"ভাই পড়তে বসলেই খুব ঘুম ধরে!"
ভালো কথা।তো ঘুমাতে যাবার পর যখন ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল চালাও তখন ঘুমে ধরেনা?!
তখন এক কাজ করবে মোবাইলের বদলে বইটা চোখের সামনে ধরে রাখবে।তাহলে টিকই ঘুমে ধরবে।
আসলে পরতে বসলে ঘুম আসাটা নিজেকে নিজে
ফাকি দেওয়ার একটা বাহানা মাত্র।তুমি যদি সিরিয়াস
ভাবে তোমার স্বপ্নটা দেখতে তাহলে ঘুম আসতো না।আসতো স্বপ্নকে সার্থক করার নিজের সর্বোচ্চ দেওয়ার
প্রচেষ্ঠা।যতক্ষন পর্যন্ত স্বপ্ন নিয়ে তোমার মধ্যে
সিরিয়েসনেস কাজ না করবে ভাববে তুমি তোমার
স্বপ্ন পূরনের সঠিক পথে নেই।তাই পরতে থাকো,
ঘুম চলে আসলে স্বপ্নের কথা ভাবো,ঢাবির ক্যাম্পাসের
ছবিগুলো দেখে সেখানে নিজের পদচারনা অনুভব করো
সত্যি বলছি ঘুম গুম হয়ে যাবে চোখ থেকে!!
৩মাস পর ঠিকই ঘুমাতে পারবা,কিন্তু এ সময়গুলো
কি আর পাবা কখনো?
এ.পি.জে আব্দুল কালাম আজাদ ঠিক ই বলেছেন,
"তুমি ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখো সেটা স্বপ্ন নয় বরং
যে স্বপ্ন তোমাকে ঘুমাতে দেয়না সেটাই স্বপ্ন"
"ভাইয়া ফেসবুকে ১০ মিনিটের জন্য ডুকলে বের হতে
২-৩ ঘন্টা লেগে যায়"
তুৃমি যদি জানোই এমন হয় তাহলে ফেসবুকে ঢুকার
দরকার নাই।আর চ্যাটিং,এই কয়েকমাস এটা না
করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।ভালোবাসা কয়েকমাস
পরেও করা যাবে কিন্তু এই সময়টা জীবনে একবারই
আসে।আর কোথায় চান্স না পেলে এত্ত ভালোবাসাও
একসময় থাকবে না।খুব বেশি দরকার না হলে ফেসবুকে
সময় নষ্ট না করাই ভালো।শুধু গ্রুপের পোষ্টগুলো পড়া ও
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলো করার জন্য একটা নির্দিষ্ট
সময় অন্তর খুব অল্প সময়ের জন্য ফেসবুক ইউজ
করবা।মনে রেখো ঢাবিতে তোমার চান্স হলোনা কিন্তু
তোমার বন্ধুরা যখন চান্স পেয়ে ছবি আপলোড দিবে তখন ফেসবুক চালাতে কেমন লাগবে???
"ভাইয়া পড়তে বসলে মাথায় নানা চিন্তা গুরপাক খায়!!"
গুরপাক খাবে না কেনো?তুমি রিয়াল লাইফে যে জিনিস
টাকে গুরুত্ব দেবে সেটাই মাথায় গুরপাক খাবে।এখন
যদি তুমি তোমার স্বপ্নের বিষয়ে সিরিয়াস হতে তাহলে
ভাবতে "দুর! এই বিষয়টা কম বুঝেছি, আরেকটু দেখতে
হবে" বা "এই অধ্যায়টা পড়া হয়নি সময় করে পড়তে
হবে"।
আর যারা সারাদিন হাবিজাবি বিষয় নিয়ে পড়ে থাকলে
পড়তে বসলে সেইসব হাবিজাবি জিনিস ই মাথায় কুটকুট করবো।কে কয়টা গোল দিলো,কার ব্রেকাপ
হলো,কার কার সাথে কার প্রেম চলছে এসব বিষয়ে
এই কয়েকমাস দূরে থাকো।মাথায় শুধু একটা জিনিস
সেট করে রাখো আমাকে যেভাবেই হোক চান্স পেতে হবে আর সেজন্য পরিশ্রম করতে হবে।
"ভাইয়া যা পড়ি তা ভূলে যাই"
এখন যদি বলি মুভি দেখলে কি সেটাও ভূলে যাও?
না তো, সেটা তো ভূলে যাওনা।তাহলে পড়া আর
মুভি দেখার মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?
মুভির প্রতি একটা ইন্টারেস্ট থাকে,মজা পাওয়ার
ইনটেনশন থাকে।পড়াশোনার প্রতি সেরকম ইন্টারেস্ট
তৈরি করো।পড়তে পড়তে একসময় সেই ইন্টারেস্ট
তৈরি হয়।তোমার লক্ষ্য হল ঢাবি আর সেটা পেতে
হলে পড়াশোনা করতে হবেই।
পড়ার সময় মনোযোগ না থাকলে ভূলে যাওয়াটাও স্বাভাবিক।এজন্য মোবাইল টা নিরাপদ দূরত্ব রেখে, মন থেকে হাবিজাবি বাদ দিয়ে,শব্দমুক্ত শান্ত পরিবেশে
পড়তে বসবে।কি পড়তেছো ধ্যান সে দিকে রাখবে।
স্বশব্দে পড়া,নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিরতি,ছন্দ আকারে
পড়লে পড়া অনেক দিন মনে থাকে।
আর যাই পড়,কম পড় তবুও বুঝে শুনে পড়বা।
পড়,পড়,পড়তে পড়তে ভূলে যাও তবুও পড়তে ভূলে যেওনা।
আজ এ পর্যন্ত।পোষ্ট পরার পরও যদি পড়তে মন
না চায় বা তোমাকে পড়ার টেবিল পর্যন্ত না নিয়ে
যায় তাহলে বুঝতে হবে তোমার কঠিন রোগে ধরেছে,
যে রোগ তোমার,তোমার প্রতি তোমার মাবাবার দেখা
স্বপ্নগুলোকে চুরমার করে দিবে।
সঠিকভাবে পরিশ্রম করলে সে পরিশ্রম কখনো
বৃথা যায় না।
তো যাও পড়তে বসো.......
.
জয়নাল আবেদিন ইমরান
ইতিহাস বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়