বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণকারী আর্থ স্টেশন গাজীপুরে অবস্থিত । সম্প্রতি একটা নিউজ চ্যানেলের মাধ্যমে জানলাম এখানে নিয়োগকৃত
জনবল সম্পূর্ণ স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়েছে । কোন প্রকার স্বজনপ্রীতির আশ্রয় যাতে কেউ না নিতে পারে, সে কারণে পুরো পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য নির্দিষ্ট কোড নম্বর প্রদান করে ভাইবা নেয়া হয়েছিল । বিসিএসের মত ২-৪ মিনিটের হয় ছক্কা না হয় অক্কা টাইপের ভাইবা নয়, সময় নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। নিউজ চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে, চাকুরী প্রার্থী পরীক্ষার্থী এমনকি যাদের শেষ পর্যন্ত চাকুরী হয় নি, তারা পর্যন্ত শতভাগ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে। আর হওয়াটাই স্বাভাবিক। দেশের প্রথম স্যাটেলাইটে, সবচাইতে যোগ্য মেধাবীদের নেয়াটাই বাঞ্ছনীয় । এখন কল্পনা করুন তো ২০ জন বিজ্ঞানী নেয়া হবে, সরকারী প্রতিষ্ঠান বলে এখানেও ৫৬% কোটা অর্থাৎ প্রায় ১২ জন কোটার জোরে আর ৪৪ % মেধা অর্থাৎ মাত্র ৮ জন বিজ্ঞানী মেধায় নেয়া হলে এই পুরো প্রজেক্ট মুখ থুবড়ে পড়তে কয় দিন লাগত ?? আমাদের কপাল ভাল কোটাধারী কোন পরীক্ষার্থী চাকুরী না হওয়ার জন্য রিট করে দেয় নাই। দিলে হইত হাই কোর্ট ৬ মাসের জন্য স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ স্থগিত করে দিত।এরকম অবস্থা চিন্তা করাটাও কি পরিমাণ হাস্যকর লাগে, একবার ভাবুন তো ??
ড. জাফর ইকবাল বলতেছেন, কোটা বিরোধী আন্দোলন আসলে চাকরি পাবার আন্দোলন। কিন্তু আমি বা যারা যেখানে বিসিএস পরীক্ষা দিব না, তাদের কেন এত মাথাব্যথা। কারণ পলিসি মেকিং-এ এই বিসিএস অফিসাররা যায়, এখন সেখানে একটা যোগ্য মানুষ গেলে যেভাবে ভবিষ্যতে আমি কোন প্রজেক্টে ফান্ডিং পাবো, একটা অযোগ্য লোক কোটা দিয়ে ঢুকে গেলে আমি কোন না কোন সময় সেই পলিসি মেকিং এর দায়িত্বে থাকা কারোর অযোগ্যতার কারণে সমস্যায় পড়তে পারি। এজন্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্য লোককে রেখে কম যোগ্যের মানুষকে কোন কোটার কারণে চাকরি দেবার বিরোধী ছিলাম। আমি দেশকে ভালোবাসি, এবং আমি বিলিভ করি, যারা দেশকে ভালোবাসবে, তারা অবশ্যই চাইবে, দেশের যে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে সবচেয়ে যোগ্য মানুষটাই যাক, কোটা দিয়ে অযোগ্য কেউ না।
কে প্রথম রাজাকার শব্দটি হালকাভাবে ও ভুলভাবে ইউজ করে মব মেন্টালিটিতে "আমি রাজাকার" স্লোগান ইনিশিয়েট করেছে, এসব জানার চেষ্টা ড. জাফর ইকবালের নেই। ওনার মতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল "চাকরি পাবার আন্দোলন"। কিন্তু আমি মনে করি কোটা সংস্কার একটা দেশপ্রেমভিত্তিক আন্দোলন, যেখানে দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থের কথা চিন্তা করা হচ্ছে কিছু মানুষের সুবিধার কথা না ভেবে। দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ফ্যামিলিকে সাহায্য দিক, তাদের সন্তানকে ফ্রি তে পড়ার সুযোগ করে দিক, বিভিন্ন ছোটখাট চাকরিতেও না হয় নিক, কিন্তু দেশের ক্ষতি করে বেস্ট পসিবল যোগ্য মানুষকে চাকরি না দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ফ্যামিলির অযোগ্য সন্তানকে চাকরি দেওয়া কিভাবে সঠিক হতে পারে, আমি জানি না। "কোটা সংস্কার আন্দোলন" ছিল "যোগ্য মানুষের চাকরি পাওয়া নিশ্চিত করার আন্দোলন"...
লিখেছেন:
অনিকেত অনিন্দ্য