Dream to BCS

Think positive, Be positive, Do positive

Dhaka University: D-Unit Details

▓▒░ Dhaka University: D-Unit Details ░▒▓█►
-
.
থ্রি ইডিয়টস সিনেমার ফারহান কুরেশীর কথা মনে আছে? যার মনের ভিতর প্রচন্ড ইচ্ছা ফটোগ্রাফার হবার কিন্তু তার বাবা-মা’র মন রাখতে গিয়ে নিজের মতের বিরুদ্ধে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে শুরু করে, আর পড়ার মাঝপথেই হাঁপিয়ে ওঠে। আমাদের মধ্যে অনেকেই ফারহান কুরেশীর মতো একই ভুল করি।স্কুলে থাকতে বাবা-মার চাপে বা বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে বিজ্ঞান বা বাণিজ্য বিভাগ বাছাই করি, কিন্তু পরবর্তীতে এই বিষয়গুলো আর ভালো লাগে না। আর অপছন্দের বিষয় পড়তে পড়তে আমরা হতাশ হয়ে পরি, রেজাল্টও আর ভালো হয় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
র ঘ ইউনিট এই গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে বের হবার জন্য অসাধারণ একটি এক্সিট রুট। ঘ ইউনিট বা ডি ইউনিট হচ্ছে বিষয় পরিবর্তনের বিভাগ। অর্থাৎ, আমরা উচ্চ মাধ্যমিক যে বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়ে এসেছি সে বিভাগের বাইরে অন্য বিষয় পড়তে চাইলে ঘ ইউনিট পরীক্ষা দিতে হবে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কলা অনুষদ, বাণিজ্য অনুষদ আর বিজ্ঞান অনুষদের অল্প কিছু বিষয় রয়েছে ঘ ইউনিটের অধীনে।
মনে রাখতে হবে, তুমি উচ্চ মাধ্যমিকে যে বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলে, সি বিভাগের বিষয় তুমি ঘ ইউনিট থেকে নিতে পারবে না। অর্থ্যাৎ, তুমি যদি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাণিজ্য বিভাগ থেকে দিয়ে থাকো, তাহলে তুমি ঘ ইউনিট দিয়ে মার্কেটিং নিতে পারবে না, বরং তোমাকে গ ইউনিট দিয়ে মার্কেটিং নিতে হবে।
ঘ ইউনিটে সব অনুষদের বিভাগ থাকলেও ঘ ইউনিটের মূল আকর্ষণ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ আর বাণিজ্য অনুষদ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ সাজানো হয়েছে অর্থনীতি, উন্নয়ন অধ্যয়ন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো অনেকগুলো প্রাণবন্ত আরে বাস্তবমুখী বিষয় নিয়ে। আছে উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন, অপরাধবিজ্ঞান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো অনেকগুলো ব্যাতিক্রমধর্মী বিষয়; যেগুলো কিছুটা অপরিচিত শোনালেও বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এগুলো খুবই যুগোপযোগী।
দেশী- বিদেশী এনজিও, উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বা প্রাইভেট কর্পোরেশন সব জায়গায়ই রয়েছে এসব বিভাগ থেকে পাশ করা ছাত্রদের বিশেষ কদর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ বা ফ্যাকাল্টি অফ বিজনেস স্টাডিজ দেশের সেরা বিজনেস স্কুলগুলোর একটি। ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের মধ্যে রয়েছে অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের এক অসাধারণ সংযোগ। তাই বছরের পর বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফবিএস শুধু পড়াশোনায় নয়, বিভিন্ন বিজনেস কম্পিটিশন, আইডিয়া কম্পিটিশনে আধিপত্য দেখিয়ে আসছে। দিন শেষে এফবিএস শুধু তোমাকে একটি বিবিএ ডিগ্রী দেবে না বরং গড়ে তুলবে সত্যিকারের ভবিষ্যত বিজনেস লিডার হিসেবে গড়ো তুলে।
ঘ ইউনিট দেশের সবচেয়ে তীব্র প্রতিযোগীতামূলক ভর্তি পরীক্ষাগুলোর একটি। লক্ষাধিক ভর্তিপ্রার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র ১৪০০ সিট। কিন্তু এতে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। সঠিক সময়ে সঠিক প্রস্তুতি নিলেই ঘ ইউনিটে সফল হওয়া সম্ভব।
#মার্কস_বন্ঠন
মোট ১২০ নম্বরের উপর পরীক্ষা হবে। তার সাথে যোগ হবে তোমার এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের উপর ৮০ নম্বর। ১২০ নম্বরের মূল পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজী, সাধারণ জ্ঞান- জাতীয় বিষয়াবলী এবং সাধারণ জ্ঞান- আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী; এই ৪টি বিষয়ের উপর পরীক্ষা দিতে হবে। ইংরেজী মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা বাংলার পরিবর্তে অ্যাডভান্সড ইংলিশ পরীক্ষা দিবে। প্রত্যেক বিষয়ে ২৫ টি করে প্রশ্ন থাকবে যার প্রতিটির মান ১.২ করে। ভুল উত্তরের জন্য যথারীতি .৩০ করে কাটা যাবে। অর্থ্যাৎ প্রতি ৪টি ভুল উত্তরের জন্য একটি সঠিক উত্তরের সমান নম্বর কাটা যাবে। প্রতি বছর বহু ছাত্র ছাত্রী যথেষ্ট পরিমানে সঠিক উত্তর দেয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র ভুল উত্তরের নেগেটিভ মার্কিং-এর জন্য ভর্তি যুদ্ধ থেকে বাদ পড়ে।
ঘ ইউনিটের জন্য বাজারে অসংখ্য বই আছে। তবে অন্য বই যতই পড়, বোর্ডের বইয়ের কোন বিকল্প নেই, কারণ অনেক সময় সরাসরি বই থেকেই প্রশ্ন হতে পারে। গ্রামারের সকল টপিক সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখো। নিজের আয়ত্তে রাখো,ভকাবুলারি তে নিজেকে সমৃদ্ধ করো। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আমার অল টাইম ফেভারিট Cliffs/barrons Toefl বই দুইটি অনেক এক্সেপশনাল নিয়ম আর অনেক এক্সারসাইজ থাকে। কাজে লাগবে।
সাধারণ জ্ঞানে বইয়ের শেষ নাই।নতুন বিশ্ব, আজকের বিশ্ব, mp3, সবই ভালো বই কিন্তু এই অল্প সময়ে এগুলো পড়ে শেষ করা পসিবল না কাজেই ঢাবির জন্য কিছু বই আছে এগুলো পড়া শ্রেয় । আর এসব বইয়ের থেকে আরো অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স। চলতি বছরের ঘটনাবলি থেকে অনেক প্রশ্ন হবে। তাছাড়া কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর ভিতরে সাম্প্রতিক বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ও সাধারণ জ্ঞানের অতিরিক্ত কিছু প্রশ্ন থাকে যেগুলো অনেক কাজে আসে। তাই কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স গুলো কিনতেই হবে। আর হ্যা, দুইটা মানচিত্র কিনতে হবে। বাংলাদেশ আর বিশ্ব। বইয়ের দোকানগুলোতে বেশ তথ্য সমৃদ্ধ কিছু মানচিত্র পাওয়া যায়। সেগুলো কেনাই ভাল।
ঘ ইউনিটে আসলে অনেকক লম্বা প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু খুব ধারাবাহিক ভাবে প্রস্তুতি নেয়া খুব জরুরী। ধারাবাহিকভাবে ২-৩ মাস ভালোমতো পড়লেই চান্স পাওয়া যায়। আপাতত তুমি কিছু প্রস্তুতি নিয়ে একটু এগিয়ে থাকতে পারো।
'আজকের সংবাদপত্রই আগামী দিনের সিলেবাস' এটা মনে রাখবা। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক খবর গুলো মন দিয়ে পড়। যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন, ইইউ ইত্যাদি এর মধ্যে কি হচ্ছে, কে কার সাথে কি চুক্তি করল একটু আপডেটেড থাকো। এতে করে যখন তুমি এগুলো তথ্য আকারে পড়বে, তখন এগুলো অচেনা মনে হবে না। বরং পুরো জিনিসটা একটা গল্পের মতো মনে হবে। যারা নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ো না তারা এই বছরের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স গুলো সংগ্রহ করে পড়ে ফেল। সেখানে সারা বছরের পত্রিকার একটা সারমর্ম পাবে। এই বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা গুলো সম্পর্কে ভালো মতো জানতে হবে।
বাংলার জন্য সাহিত্যের থেকে ব্যাকরণ বেশী গুরুত্বপুর্ণ, তাই ব্যাকরণেই বেশী সময় দাও। মাধ্যমিকের বাংলা দ্বিতীয় পত্র বইটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো মতো পড়। এমনকি উদাহরণগুলোও খেয়াল করো। অনেক সময় উদাহরণ থেকেই সরাসরি প্রশ্ন হয়।
সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্র্যাক্টিস। আগেই বলেছি। অনেক বেশী পড়ে লাভ হবে না। বরং যা পড়ছ তা একটু চর্চা করো। নিজেকে যাচাই করো।