বিসিএস পরীক্ষায় দৈনন্দিন বিজ্ঞানে ভাল করার কৌশল
-
অভিজিৎ বসাক
বিসিএস ( প্রশাসন)
৩৩তম বিসিএস
-
এই পর্বে আমরা বিদ্যুৎ, চুম্বকত্ব ও ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করব। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখলে বুঝতে পারবেন এই তিনটির মধ্যে সবথেকে বেশি প্রশ্ন করা হয় বিদ্যুৎ থেকে। আসলে বিদ্যুৎ থেকে প্রায় প্রতি বছরই গড়ে ২-৩ টি প্রশ্ন করা হয়। তাছাড়াও চুম্বকত্ব ও ইলেক্ট্রনিকস নিয়েও একটি দুটি করে প্রশ্ন থাকে। ইলেক্ট্রনিকস থেকেও একটি করে প্রশ্ন প্রায়ই আসে।
বিদ্যুৎ নিয়ে পড়ার শুরুতেই বিদ্যুতের একদম বেসিক জিনিসগুলো পাঠ্য বই থেকে পরে নিতে হবে। কারণ এটা না করলে পরবর্তী অংশগুলো বুঝতে অসুবিধা হবে। তাই বিদ্যুৎ কি, বিদ্যুতের প্রকারভেদ, কোনটি কি ধরণের বিদ্যুৎ এগুলো ভালমতো শিখে নেবেন। কোন পদার্থ বিদ্যুৎ পরিবাহী, কোনটি অপরিবাহী আর কোনটি অর্ধপরিবাহী এগুলোকে একটা চার্ট তৈরি করে পড়তে হবে। অর্ধপরিবাহী খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। সকল প্রকার ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র ও চিপ তৈরিতে এই অর্ধপরিবাহী জিনিসটি প্রয়োজন হয়। যেসব জিনিস গুরুত্বপূর্ণ এসব জিনিস থেকে বেশি প্রশ্ন হবে, আর এটা সব সাবজেক্টের জন্যই প্রযোজ্য। আমরা যখন কোন জিনিস পড়ব তখন আমাদের এভাবে গুরুত্ব অনুসারে ভাগ করে সময় কম বেশি করে পড়তে হবে। কারণ সব জিনিস পড়ে সবকিছু মনে রাখা কারও পক্ষেই সম্ভব না।
এগুলো ছাড়াও তড়িৎ কোষ, এর ধরণ, ব্যাটারি, অ্যামিটার, ভোল্ট মিটার, গ্যালভানোমিটার সম্পর্কেও জানতে হবে। কোন মিটার দিয়ে কি পরিমাপ করা হয় এগুলো থেকে প্রায়ই প্রশ্ন করা হয়। তড়িৎ প্রবাহের একক, হার এগুলোর সাথে মিটারের একটা সম্পর্ক আছে। সেগুলো একটু বুঝতে পারলে এই তথ্যগুলো মনে রাখা খুবই সহজ। আসলে বিজ্ঞানের বেসিক বিষয়গুলো ধরতে পারলে বিজ্ঞান মনে রাখাটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
চুম্বক থেকে তুলনামূলক একটু কম প্রশ্ন হয়। তবে এই অধ্যায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস থেকে প্রায়ই প্রশ্ন হয়। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো- ভূচুম্বক। আমাদের পৃথিবীটাই বিরাট একটা চুম্বকের মত আচরণ করে। ফলে একটি চুম্বককে যদি আমরা ঝুলিয়ে দেই তবে সেটা উত্তর ও দক্ষিণ মুখ করে থাকে। পৃথিবীর এই চুম্বকীয় বিশিষ্টের কারণেই ভূচুম্বক কথাটির উৎপত্তি হয়েছে। চুম্বক পদার্থ, স্থায়ী চুম্বক, কৃত্রিম চুম্বক এগুলো একবার পড়লেই বুঝতে পারবেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গ। আলো, রেডিও তরঙ্গ, আমাদের খাবার গরম করার মাইক্রোওয়েভ ওভেনের মূল চালিকা শক্তি- মাইক্রোওয়েভ, গামা রশ্মি এগুলো সবই তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গ। শুধুমাত্র এদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য আলাদা। মজার বিষয় তাই না? বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এই জিনিসগুলো একবার ভালমতো বুঝতে পারলে মনেও রাখতে পারবেন, আবার অনেক মজাও পাবেন।
ইলেক্ট্রনিক্স ছাড়া আধুনিক জীবনের কথা কল্পনাই করা যায় না। অর্থাৎ এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। তাই এখানে থেকে প্রশ্ন আসবে এটাই স্বাভাবিক। ইলেক্ট্রনিকসের মূল চালিকা শক্তি হলো ইলেকট্রন। আর ইলেকট্রনের প্রবাহকেই বিদ্যুৎ প্রবাহ বলা হয়। ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়েই এই যন্ত্রগুলো চলে। এই বেসিক বিষয়গুলো জানতে হবে। এই অধ্যায় থেকে ট্রানজিস্টার, রেকটিফায়ার, আইসি, রাডার, ফ্যাক্স টেলিভিশন এসব টপিক থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়। কোনটি কি রশ্মি বা তরঙ্গ ব্যাবহার করে চলে এই বিষয় থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া আপনারা বিগত বছর প্রশ্নগুলো একটু লক্ষ্য করলেই কোন বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা ভালমতো বুঝতে পারবেন। টেলিভিশন থেকে কোন ক্ষতিকর রশ্নি বের হয়? রাডার কোন তরঙ্গ ব্যবহার করে চলে? ফটোকপি মেশিন কোন ধরণের বিদ্যুৎ দিয়ে চলে? মডেমের কাজ কি? টেলিভিশনের ভেতরের পর্দায় কোন পদার্থের প্রলেপ থাকে? টেলিভিশনের পর্দায় কোন রঙ ব্যবহার করা হয় না? আইসি কি? এর পূর্ণ রূপ কি? এই ধরণের প্রশ্নগুলো বেশি আসতে দেখা যায়। প্রশ্নের ধরণ বুঝে, পুরোপুরি মুখস্থ নির্ভর না হয়ে পড়তে থাকুন। দেখবেন ঠিক সিলেবাস কাভার হয়ে গেছে।
সবার জন্য শুভকামনা।লেখা বিষয়ে কোন পরামর্শ থাকলে আমার ইনবক্সে যোগাযোগ করতে পারেন। ফেইসবুক আইডিঃ Avizit Basak
“All Birds find shelter during a rain. But Eagle avoids rain by flying above the Clouds.
Problems are common, but attitude makes the difference!!!”
― A.P.J. Abdul Kalam
বি দ্রঃ লেখাটাতে শুধু আমার নিজের আইডিয়া অনুযায়ী ধারণা দেয়া হয়েছে। আপনি আপনার মত করেও প্রস্তুতি নিতে পারেন। সফল হবার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার, সেটা সম্পন্ন করাটাই মুখ্য কাজ।আর ছোটখাটো বা অনিচ্ছাকৃত কোনও ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।