বিসিএসের প্রথম ধাপটা যেভাবে শুরু করবেন
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
বিসিএসে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী
বাদ পড়ে প্রিলিমিনারি পর্ব থেকে।
বিসিএস প্রিলিতে পাস করার জন্য
১০টি রেফারেন্স বই পড়ার চেয়ে এক
সেট গাইড বা ডাইজেস্ট বা
প্রশ্নব্যাংক পড়া বুদ্ধিমানের কাজ।
বিসিএস পরীক্ষা জ্ঞানী হওয়ার
পরীক্ষা নয়, মার্কস পাওয়ার পরীক্ষা!
আপনি অন্যদের সমান পরিশ্রম করবেন,
কিন্তু অন্যরা যে সময়ে একটা
অপ্রয়োজনীয় কিংবা কম প্রয়োজনীয়
জিনিস পড়ে, সে সময়ে আপনি একটা
প্রয়োজনীয় টপিক দুইবার রিভিশন
দিতে পারবেন কিংবা পড়া হয়নি এ
রকম একটা প্রয়োজনীয় বিষয় পড়ে
ফেলতে পারবেন। হিসাব করে দেখুন,
অন্যদের তুলনায় আপনার কাজের পড়া
হচ্ছে অন্তত দ্বিগুণ!
যারা বিসিএস পরীক্ষা দেবেন,
প্রস্তুতিপর্বে তাঁদের প্রথমেই
পরিবর্তনটা আনতে হবে মাইন্ডসেটে।
প্রস্তুতি নিচ্ছেন, অথচ সেটা ঠিকমতো
কাজে লাগছে না। কেন? আপনার
প্রস্তুতির ধরন ঠিক নেই। আপনি যা যা
পারেন না, তা তা পারা দরকার কি
না, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। যদি
দরকার হয়, তবে সেসব কিছু কিভাবে
পারতে হয়, সেটা নিয়ে ভাবুন। একটা
কাগজে লিখে ফেলুন আপনার কোন
কোন দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে।
যারা বিসিএস ক্যাডার হতে পারে
আর যারা পারে না, তাদের মধ্যে
পার্থক্য খুব বেশি নয়। তিন জায়গায়
পার্থক্য আছে বলে মনে হয়।
এক. প্রস্তুতি নেওয়ার ধরনে।
দুই. পরীক্ষা দেওয়ার ধরনে।
তিন. ভাগ্যে।
আপনি তৃতীয়টায় বিশ্বাস করেন না?
আচ্ছা ঠিক আছে, বিসিএস পরীক্ষা
দিন, বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন।
যেকোনো পরীক্ষায় ভালো করার
চারটি বুদ্ধি আছে :
পরিশ্রম কী নিয়ে করব,
পরিশ্রম কেন করব,
পরিশ্রম কিভাবে করব এবং
এই তিনটি জেনে-বুঝে কঠোর পরিশ্রম
করা।
বিসিএস দেশের সবচেয়ে কঠিন
পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় ভালো করতে
বুদ্ধিমত্তা কিংবা মেধার চেয়ে
পরিশ্রমের মূল্য বহু গুণে বেশি।
বুদ্ধিমত্তা বড়জোর আপনি কিভাবে
ভালোভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন,
সেটা ঠিক করে দিতে পারে। কিন্তু
আসল কাজটাই হলো পরিশ্রমের।
প্রতিটি পরীক্ষায়ই কিছু কিছু দিক
থাকে, যেগুলো নিয়ে কেউ-ই আগে
থেকে কিছু বলতে পারে না। ওই
ব্যাপারগুলো যে যত সুন্দরভাবে
হ্যান্ডেল করতে পারবে, তার সফল
হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। আপনাকে
কোনো বিষয়েই অনেক পণ্ডিত হতে
হবে না। যেটা করতে হবে সেটা হলো,
সব বিষয়েরই বিভিন্ন বেসিক
ভালোভাবে জানতে হবে। এ
ক্ষেত্রে যে যত বেশি জেনে নিতে
পারবে, প্রতিযোগিতায় সে তত বেশি
এগিয়ে থাকবে।
প্রতিদিনই পড়তে বসুন। দু-একদিন পড়া
বাদ যেতে পারে, সেটাকে পরের
দিন বেশি পড়ে পুষিয়ে নিন। বিসিএস
পরীক্ষা মৌসুমি পড়ুয়াদের জন্য নয়।
পড়ার সময় অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো
বাদ দিয়ে পড়বেন। কোন কোন
বিষয়গুলো অপ্রয়োজনীয়? এটা বোঝার
জন্য অনেক অনেক বেশি করে প্রশ্নের
ধরন নিয়ে পড়াশোনা করুন। বিসিএস
পরীক্ষা বেশি জানার পরীক্ষা নয়;
বরং যা দরকার তা জানার পরীক্ষা। সব
কিছু পড়লে পণ্ডিত হবেন, বুঝেশুনে
পড়লে ক্যাডার হবেন। পছন্দ আপনার!
প্রচুর প্রচুর প্রশ্ন পড়ুন। গাইড বইয়ে,
প্রশ্নব্যাংকে, মডেল টেস্টের গাইডে,
যেখানেই প্রশ্ন পান না কেন। দশম
থেকে ৩৭তম বিসিএস, দুই-তিনটা জব
সল্যুশন কিনে পিএসসির নন-ক্যাডার
পরীক্ষার প্রশ্নগুলো (সম্ভব হলে, অন্তত
২৫০-৩০০ সেট) বুঝে বুঝে সলভ করে
ফেলুন। দাগিয়ে দাগিয়ে রিভিশন
দেবেন অন্তত দুই-তিনবার। চারটি নতুন
রেফারেন্স বই পড়ার চেয়েও দুটি গাইড
বই রিভিশন দেওয়া অনেক বেশি
কাজের।
আপনার সক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিদিন কত
সময় পড়াশোনা করবেন, সেটা ঠিক করে
নিন। অসুস্থ হয়ে না পড়লে সময় কমানো
যাবে না—এটাই প্রতিজ্ঞা করতে
হবে। এতে আপনার যে লাভটি হবে,
শেষ মুহৃর্তের বাড়তি চাপ থেকে
নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।
কোচিং সেন্টারের বিষয়ে পরামর্শ
হলো, কোচিং সেন্টারে যাওয়া
যাবে যদি আপনি ওদের সব কথাকেই
অন্ধভাবে বিশ্বাস না করেন।
আপনাকেই ঠিক করতে হবে, আপনার কী
করা উচিত, কী করা উচিত নয়। গ্রুপ
স্টাডি করা কতটুকু দরকার? এটা আপনার
অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে।
এবার আসি বাংলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে।
কোথা থেকে পড়বেন?
ভাষা : আগের বিসিএস পরীক্ষাগুলোর
প্রশ্ন+জব সলিউশন+নবম-দশম শ্রেণির
ব্যাকরণ বই+হায়াৎ মামুদের ভাষা-
শিক্ষা+গাইড বই।
সাহিত্য : আগের বিসিএস
পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন+জব সলিউশন
+সৌমিত্র শেখরের সাহিত্য
জিজ্ঞাসা+হুমায়ুন আজাদের লাল
নীল দীপাবলি+মাহবুবুল আলমের
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস+গাইড বই।
কিভাবে পড়বেন
নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
প্রথমপত্র বইয়ের লেখক পরিচিতি
অংশটি দেখে নিন। লাল-নীল
দীপাবলি, জিজ্ঞাসা, মাহবুবুল
আলমের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস,
বিগত বিসিএসের বাংলা সাহিত্যের
প্রশ্নাবলি ভালোভাবে পড়ে নিন।
মুখস্থ নয়, বারবার পড়ুন, এতে মনে থাকবে
বেশি।
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, হায়াৎ
মামুদের ‘ভাষা শিক্ষা’ থেকে
সিলেবাসের টপিক ধরে ধরে
অধ্যায়গুলো পড়ে নিন। ব্যাকরণের
একেবারে কঠিন কাঠখোট্টা প্রশ্নগুলো
কষ্ট করে মনে রাখার দরকার নেই। সব
কিছু পারার পরীক্ষা বিসিএস নয়।
কঠিন প্রশ্নে কোনো বাড়তি মার্কস
থাকে না, তাই একটি কঠিন প্রশ্ন
শেখার জন্য অনেক বেশি সময় না দিয়ে
ওই একই সময়ে ১০টি সহজ প্রশ্ন শিখুন।
আগের বিসিএস প্রিলিমিনারি আর
লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন স্টাডি করে
কোন ধরনের প্রশ্ন আসে, কোন ধরনের
প্রশ্ন আসে না, সে সম্পর্কে ভালো
ধারণা নিন। খুবই ভালো হয়, যদি
সাহিত্য অংশটি পড়ার সময় লিখিত
পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলা যায়।
কারণ এর জন্য বাড়তি কোনো কষ্ট করতে
হবে না। পরীক্ষার হলে কিছু প্রশ্নের
উত্তর কিছুতেই পারবেন না—এটা
মাথায় রেখে সাহিত্য অংশের
প্রস্তুতি নিন, দেখবেন পরীক্ষা ভালো
হয়েছে। আক এ পর্যন্তই গুড লাক!
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
☑ বি দ্রঃ পোষ্টটি আপনার সময়মত পড়ার জন্য শেয়ার করে নিজের Facebook টাইমলাইনে রাখুন। আর পোষ্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদেরকে উত্সাহ দিবেন।